in therapy 21/12/2011. cartoon- sumon ahmed. |
ইন্দ্রজিৎ ইমন
মামার বাড়িতে একরাতইন্দ্রজিৎ ইমন
শুধু ভুমিকম্প হলেই আমাদের সর্বস্ব কাঁপে তা কিন্তু নয়। আমাদের সর্বস্ব কাঁপার পিছনে আরো নানাবিদ কারণ আছে। তার মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য কারণটা হচ্ছে শীত। শীতের ভয়ে বা দাপটে কেউ কাঁপেনি এমন বীরপুরুষ কিংবা বীরমহিলা হারিকেন দিয়েও খুঁজে পাওয়া যাবে না। তবে এই ডিজিটাল যুগে এসে হারিকেনই বা খুঁজে পাবেন কিনা সেই ব্যাপারে আমার ব্যাপক সন্দেহ আছে। সেই যাই হোক, আজকের আলোচিত বিষয় খুঁজাখুজি না, বিষয়টা হচ্ছে শীত। তাই শীত নিয়েই কিছু বলা যাক।
শীতকালটাকে অনেকেই পছন্দ করেন একটা বিশেষ কারণে। তা হচ্ছে শীতের রাতে লেপ মুড়ি দিয়ে ঘুমানো। শীতের রাতে লেপ মুড়ি দিয়ে ঘুমানোর মজাই আলাদা। ঘুমানোর কথা বলাতে আমার এক ঘনিষ্ট বন্ধু আসিফের কথা মনে পড়ে গেল। একবার শীতে আসিফ গিয়েছিল মামার বাড়ি। পরিকল্পনা ছিল সেদিনই ফিরে আসবে তাই এঙ্টা কাপড়-চোপড় নিয়ে যায় নি। কিন্তু মামার বাড়ি গিয়ে আসিফ ফেঁসে যায়। একে তো অনেকদিন পরের গিয়েছে সে মামার বাড়ি তার উপরের মামা-মামীর অধিক মাত্রায় জোরাজুরিতে আসিফকে থাকতেই হলো একরাত। মামার বাড়িতে থাকার পিছনে আরেকটা জোরালো কারণ হচ্ছে মামাতো বোন জুঁই। মামাতো বোনটা যে তার এত সুন্দরী হয়ে গেছে তা কে আগে জানত! তাই থেকেই গেল আসিফ মামার বাড়িতে একরাত। বিপত্তি হলো রাতে ঘুমাতে গিয়ে। আসিফ চেঞ্জ করে পরেছিল মামার লুঙ্গী। কিন্তু আসিফ কখনও লুঙ্গী পরে ঘুমায় নি। বাসায় সবসময় থ্রি-কোয়াটার বা টাউজার পরে ঘুমায়। এখানে সে থ্রি-কোয়াটার বা টাউজার পাবে কোথায়? তাই মামার লুঙ্গী পরেই লেপ মুড়ি দিয়ে শুয়ে পড়ল আসিফ। সকালে ওঠে আসিফ অবাক। তার পরনের লুঙ্গী তার পরনে নাই! সে লেপের নিচে পুরো উদোম হয়ে শুয়ে আছে। আসিফ হাত দিয়ে খাটের এদিক-ওদিক খুঁজে দেখল। কিন্তু লুঙ্গী পেল না। এদিকে তার টয়লেটও চেপেছে ভীষণ ভাবে। কি বিপদ ! এখন সে কি করে ! আসিফ শরীরে লেপ পেঁচিয়ে খাটের নিচ ভালো করে দেখল। কিন্তু সেখানেও সে তার লুঙ্গীর 'ল' ও খুজে পেল না। এইদিকে মামী তাকে ডাকছেন ঘুম থেকে উঠে হাত-মুখ ধুয়ে গরম গরম পিঠা ও পায়েস খাওয়ার জন্য। মামী আজ নিজেদের খেঁজুর গাছের রস দিয়ে পায়েস করেছেন। সাথে হরেক রকম পিঠা। আসিফের ক্ষুধাও লেগেছে। তার উপর পায়েস আর পিঠার গন্ধে যেন ক্ষুধাটা আরো ঝেঁকে বসেছে। কিন্তু এই অবস্থায় কি করবে সে। তার এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে কাউকে কিছু বলতেও পারছে না আবার টয়লেটও রাখতে পারছে না। তার উপরের নতুন চালের পিঠার ঘ্রাণ। সে উঠে বসল। ঘরের এইদিক ঐদিক দেখতে লাগল যদি কেউ লুঙ্গীটা পেয়ে তুলে রাখে এই বিশ্বাসে। কিন্তু না, কোথাও নাই। আসিফ এইদিকে কারো আসার শব্দ পায়। সে আবার লেপ মুড়ি দিয়ে শুয়ে পড়ে। মামাতো বোন জুঁই ঢুকে তার ঘরে। সে আসিফকে ডাকে। আসিফ সাড়া দেয় না। ভাব এমন যে সে গভীর ঘুমে অচেতন। জুঁই ডাকতে ডাকতে এক পর্যায়ে আসিফের লেপ ধরে টান দেয়। আসিফ হুড়মুড় করে উঠে বসে লেপটাকে আঁকড়ে ধরে। এইদিকে যা সর্বনাশ হওয়ার হয়ে গেছে। জুঁই লজ্জা পেয়ে সেখান থেকে ছুটে পালায়।
আসলে ঘটনা হয়েছে কি সকালে আসিফের মামী আসিফের ঘর ঝাড়ু দিতে এসে খাটের নিচে লুঙ্গীটা পান। উনি ভাবলেন,'ধোয়া লুঙ্গীটা মেঝেতে পরে থেকে শুধু শুধু ময়লা হচ্ছে। তারচেয়ে বরং লুঙ্গীটা তুলে রাখি।' যেমন ভাবা তেমন কাজ, মামী লুঙ্গীটা তুলে তাদের ঘরের আরনাতে রেখে আসেন। তখন কি আর মামী জানতেন এটা ছিল আসিফের পরনের লুঙ্গী!
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
thanks.