বৃহস্পতিবার, ১২ জানুয়ারী, ২০১২

দিন যায় কথা থাকে

দিন যায় কথা থাকে
ইন্দ্রজিৎ ইমন

'দিন যায় কথা থাকে' ডিজিটাল এই সময়ে কথাটার নতুন সংস্করণ করার প্রয়োজন বোধ করছি। কথাটা এমন হলে বেশি যুক্তিসংগত হয়। তা হল 'দিন যায়, ভাড়া বাড়ে।' পুরনো বছর চলে যাবে নতুন বছর আসবে,এটা স্বাভাবিক। সে সাথে আরেকটা বিষয় অনেকটা স্বাভাবিক পর্যায়ে নিয়ে এসেছে আমাদের বাসাবাড়ির বাড়িওয়ালারা। তা হলো নিয়ম করে প্রতিবছর বাসাভাড়া বাড়ানো। আমারা যে বাসায় এখন থাকি পাঁচ বছর আগে সে বাসার জন্য ভাড়া গুনতে হতো সাড়ে সাত হাজার টাকা। টাকার তুলনায় বাসাটাকে তখনই অনেক ছোট মনে হতো। রূমগুলো যেন এক একটা কবুতরের খোঁয়ার। এখন সেই বাসার জন্যই গুনতে হচ্ছে সাড়ে তের হাজার টাকা! দু'দিন পর জানুয়ারী মাস থেকে তা বেড়ে দাঁড়াবে সাড়ে চেীদ্দতে। এখন আর টাকার সাথে রূমগুলোর তুলনা করিনা। ভয় লাগে। আসলে কিসের সাথে তুলনা করব এই ভেবে তুলনা করার ঝামেলায় যেতে চাই না।
একবার বাড়িওয়ালা আঙ্কেলকে জিজ্ঞেস করেছিলাম,' আচ্ছা আঙ্কেল,আপনি যে বছর বছর বাড়ি ভাড়া বাড়ান, এটা কি ঠিক ?' প্রশ্ন শুনে উনি বিব্রত হন। নিজেকে সামলে নিয়ে হেসে জবাব দেন,'ভাতিজা,তুমিই ঠিকই বলেছ। এটা আসলেই ঠিক না। ঠিক আছে, আগামী বছর থেকে তুমি না হয় প্রতি ছয় মাস অন্তর অন্তর বাসাভাড়া বাড়িয়ে দিও!' আমি আর কথা বাড়াই নাই। উনার সাথে যত কথা বলব ততোই বিপদ। দরকার কি সেধে সেধে বিপদ বাড়িয়ে। তাই সেখান থেকে দ্রুত সটকে পড়ি। অবশ্য এইটাও ঠিক যে, বাড়িওয়ালারা অনেকটা বাধ্য হয়েই বাসা ভাড়া বাড়ান। যেখানে কয়েক মাস পর পর যেভাবে সরকার বিদ্যুৎ বিল, গ্যাস বিল, ওয়াসার বিল বাড়াছে সেক্ষেত্রে বাড়িওয়ালাদেরও বা আর কি করার থাকে!
অবশেষে পুরানো একটা জোকস বলে লেখাটা শেষ করছি .. ..
মফিজ নির্জন একটা রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় রাস্তার পাশে হাবিজাবি ময়লার স্তুপের সাথে একটা পুরানো প্রদীপ দেখতে পায়। সে কৌতুহল বসত প্রদীপটা সেখান থেকে তুলে নেয়। প্রদীপের গায়ে বিস্তর ময়লার স্তর। মফিজ প্রদীপ থেকে ময়লা ঝাড়ার জন্য সে না প্রদীপের গায়ে হাত দিয়ে ঘষা দিয়েছে সাথে সাথে ভয়ানক অট্টহাসি দিয়ে প্রদীপ থেকে বের হয়ে এল এক বিরাটাকৃতি দৈত্য। দৈত্যকে দেখে মফিজের ভয়ে ফিট হওয়ার দশা। আবার ঝেড়ে দৌড় লাগাবে তারও উপায় নাই। পা দু'টোকে তার পাথরে মতো ভারি মনে হয়। সে ভয়ে চোখ বুজে আল্লাহর নাম নিতে থাকে। দৈত্য বলল, ' হুকুম করুন আমার মালিক। এই প্রদীপ যার কাছে থাকে আমি তার গোলাম। বলুন আপনার কি ইচ্ছা?' দৈত্যের কথা শুনে মফিজ ভয়ে ভয়ে এক চোখ খুলে দৈত্যের দিকে তাকায়। দেখে দৈত্য হাত জোরো করে তার সামনে দাঁড়িয়ে আসে। মফিজের 'আলাউদ্দিনের আশ্চর্য প্রদীপের' কথা মনে পড়ে। সে বুঝতে পারে তার কুড়িয়ে পাওয়া প্রদীপটাও ঐরূপ একটা প্রদীপ। তার সাহস ফিরে আসে। খুশিতে তার নাচতে ইচ্ছা করে। দৈত্য আবার বলল, 'হুকুম করুন আমার মালিক। আমি আপনার গোলাম।'
মফিজ বলল,'আমাকে একটা বাড়ি বানিয়ে দাও। ভাড়াবাড়িতে থাকতে থাকতে অতিষ্ট হয়ে গেছি।
মফিজের কথা শেষ হতে না হতে দৈত্য মফিজের গালে কষে একটা থাপ্পর দিয়ে বলল, 'আওে উজবুক,আমার যদি বাড়ি বানানো বা কেনার মতো সামর্থ্য থাকতো তাহলে কি আর বোকার মতো পুরানো এই প্রদীপের মধ্যে থাকি!'
আকস্মিক এই ঘটনায় মফিজ হতবাক হয়ে যায়।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

thanks.