বুধবার, ১৩ জুন, ২০১২

kaler kanther office e ekdin!



ei picture e caption likhesen- sumon ahmed
and ei puro lekhata likhesen- joyanta shaha.
কালের কণ্ঠের রম্য ম্যাগাজিন ঘোড়ার ডিম। শুরু থেকেই এই ম্যাগাজিনের লেখকগুলোকে খুঁজে বেড়াতাম। এক এজি মাহমুদ ভাই ছাড়া আর কাউকে কোনদিন আমি ঘোড়ার ডিম ডেস্কে দেখি নি। বিভাগীয় সম্পাদক মাহবুবুল আলম কবীর ভাইকে জিজ্ঞাসা করতাম, ভাই আপনের লেখকরা আসে না.. ? ভাইয়া বলতেন- ওরা সব মেইলেই যোগাযোগ করে।  দু তিন মাসের টাকা জমলে তবেই ওরা অফিসে আসে। তবুও আমি ওদের দেখার জন্য কত আকুতি ! কালের কন্ঠের অফিস বসুন্ধরা সিটি ছেড়ে চলে এল বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় । সেখানে ও তাদের দেখা পাই নি। কাকতালীয় ভাবে একদিন ফেসবুকে আমার সাথে পরিচয় রম্য লেখক অনামিকা মন্ডলের সাথে। তিনিই আমাকে ঘোড়ার ডিমের অফিসিয়াল গ্রুপে অ্যাড করেন। তখন থেকেই ঘোড়ার ডিমের সদস্যদের নিয়ে জানতে শুরু করি। আসাদুল্লাহ ভাই ও আমাকে ফেসবুকে অ্যাড করেন। ওদের দুইজনের কথাসূত্র থেকে জানলাম ঘোড়ার ডিমের লেখকদের আদ্যোপান্ত। এ মাসেই কালের কন্ঠের বিখ্যাত হিসাব রক্ষন বিভাগ নভেম্বর ২০১১ এর বিল পরিশোধ করে। এ বিলের নিউজ আমি ঘোড়ার ডিম গ্রুপে পোস্ট করি। আমি নিজে রম্য লেখা বা কার্টুন আঁকা এসবের মধ্যে নেই। আমার দ্বারা এগুলো হয়ে উঠে না। তবুও কালের কন্ঠের সবচেয়ে সিনিয়র কন্ট্রিবিউটর হিসাবে সবাইকে নিউজগুলো জানিয়ে দিই আমি। ১২ জুন অনামিকা দিদি জানালেন আসাদ ভাই আর ইমন ভাইকে তিনি অফিসে আসবেন।কিন্তু নিয়ে এলেন এদের সবাইকে!
asad , sumon, srabon, anamika, emon.
যাই হোক কথামতই ১৩ জুন সকালে আমি অনামিকা দিদির সাথে দেখা করি। বসুন্ধরা গেইটে অনামিকা দিদি জানালেন , ঘোড়ার ডিম পরিবারের সদস্য ইমনের বার্থডে চলে গেছে ২ জুন। কিন্তু ঘোড়ার ডিম পরিবার মাসব্যাপি ইমনের বার্থডে পালনের নীতিগত (!) সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সে উপলক্ষে আজ বিল তোলা ও ইমনের বার্থডে সেলিব্রেশন দুই হবে। রথ দেখতে এসে কলা বেচার মত আর কি!  ইমনের বার্থডের দিন আমরা কিন্তু কলা কিনি নাই। আমরা কিনেছি ভ্যানিলা ফেøবারের ইয়াম্মি আইসক্রিম। এ পছন্দ অনামিকা দিদির। টাকার কুমির বটে, আসাদ ভাই বা আমাকে টাকা দেবার সুযোগ না দিয়ে পুরো টাকাই অনামিকা দিদি পরিশোধ করে দিলেন। শেয়ারিংয়ের সুযোগ না পেয়ে রাগে ফুঁসছিল আসাদ ভাই। রিক্সার আসার পথে আমরা মতলব আঁটছি কি করে ইমন ভাইকে ভড়কে দেওয়া যাবে! ইমন ভাই আমাদের পিছনের রিক্সায় আসছেন। রিক্সা ভাড়া মেটাল আসাদ ভাই। তারও অনেক টাকা পয়সা ( ছিনতাইকারীরা খুব খিয়াল কইরা ..  পি: )। অফিসে আমার বুদ্ধি মোতাবেক আইসক্রিম বক্স চলে গেল বিখ্যাত (!) ক্যান্টিনের ফ্রিজে। ক্ষুধায় মরছিলাম, আমি আর আসাদ ভাই গোগ্রাসে সিঙ্গারা খেলেও অনামিকা দিদির মুখে গরীবের খাবার রুচে না। অনামিকা দিদিকে দেখিয়েই সিঙ্গারা খেতে লাগলাম। ততক্ষনে ক্যান্টিনের পথে রওনা হয়েছেন কালের কন্ঠের রম্য সম্পাদক কবীর ভাই আর আমাদের বার্থডে বয় ইন্দ্রজিৎ মন্ডল ইমন। তিনি এসেই বেশ ভাব নিয়ে আইডিয়া লিখতে বসে পড়লেন। দু চার লিখে কবীর ভাইকে দেখাতেই বাতি ফিউজ করে দিলেন। লেখা পছন্দ হয়নি। কবীর  ভাই ইমন দার কাগজ ছিনতাইয়ের মতলবে ছিলেন। ইমন তার ইঙ্গিত বুঝতে পারে নি। তার প্যাডটার দিকে আমারও কিঞ্চিৎ আকর্ষন হয়েছিল। যাই হোক , এটা আর বাগাতে পারি নি আমরা। চা-সিঙ্গারা চলে এল। আমাদের আড্ডায় যোগ দিলেন কালের কণ্ঠের রাজনীতি ম্যাগাজিনের বিভাগীয় সম্পাদক আরিফ জেবতিক। প্রজন্মের এই ব্লগার শোনালেন প্রথম প্রজন্মের রম্য লেখকদের কথা। ভোরের কাগজ থেকে কিভাবে যাত্রা শুরু করেছিলেন তারা। প্রথম আলোর আলপিনকে জনপ্রিয় করার পিছনে কাদের অবদান বেশি ছিল তাও শোনলাম। আমাদের আড্ডায় উপস্থিত ছিলেন বিখ্যাত রম্য লেখক সাব এডিটর মেহেদি আল মাহমুদ। আড্ডবাজির ইতি টেনে আমরা ছুটলাম অ্যাকাউন্টসের দিকে। রম্য লেখকদের ভাগ্য বলতে হবে ! বিল দেবার দিন অফিসার আওলাদের দেখা পান না অনেকেই। কন্ট্রিবিউটরদের জ্বালায় তিনি আত্মগোপন করেন। নয়তো নানা বাহানায় গরিমসি করেন। এবার আওলাদ ভাই বিল প্রদানে কোন গন্ডগোল করেননি। মাত্র আধা ঘন্টায় সবাই বিল তুলে নিল। ফিচার সেকশনে যৎকিঞ্চিৎ বাক্যালাপ সেরে আমরা ছুটলাম  ক্যান্টিনের দিকে। আইসক্রিম বক্স নিয়ে আসা হল। এবার সেই মাহেন্দ্রক্ষন। পার্টি স্প্রে নেই। কিন্তু আসাদ ভাই সেভেন আপের বোতল দিয়েই কাজ সারলেন। আইসক্রিম বক্স খুলে আমাদের ধন্য করলেন ইমন দাদা। বেশ ভাবসাব নিয়ে কেক বক্স দেখতে লাগলেন তিনি। বিপত্তি বাধল, আমরা ক্যান্টিন থেকে কোন চামচ আনি নি। আইসক্রিম হাতে নিয়েই খেতে হবে। আনন্দের দিনে এমন বিপত্তি কি বাধ সাধে ! এগিয়ে এলেন অনামিকা দিদি। তার স্টিলের স্কেলটাই চামচের কাজ করল। ময়লা হাত পেতেই আইসক্রিম গ্রহন করলাম। বেশ মজার ছিল আইসক্রিম। ও আমাদের ভেন্যুটার কথাই তো বলা হয়নি। মিডিয়া হাউজের ক্যান্টিনের ঠিক সামনে বাজার আনার ভ্যানটাকে টেবিলের কাজে লাগিয়েছি। আমাদের আয়োজনে ভিড়মি খেয়েছেন সাংবাদিক, কর্মকর্তারা। তাদের বঞ্চিত করি নি আমরা। আমাদের মোবাইলে চলছে ফটোসেশন। এই ফটোসেশনে  যে যার মত করে পোজ দিচ্ছে। ঠিক আড়াইটায় আনন্দ যজ্ঞের পরিসমাপ্তি। ব্যস্ত রম্য লেখকরা ছুটবেন নিজ গন্তব্যে। মন চায় নি, বিদায় জানাতে। ভিতর থেকে মনটা বলছিল, বল না ওদের বিকালটা পার করে যেতে। কিন্তু নিয়তির লিখন  ! সবাইকে বিদায় জানিয়ে আমি ডুব দিলাম আমার কাজে। ২০১০ এর পহেলা ফাল্গুনের পর আমরা প্রদায়কেরা এক সাথে হলাম। নতুন কিছু মানুষের সঙ্গে দেখা হল। অবাক হলাম অনামিকা দিদি, আসাদ ভাই, ইমন দা, সুমন ভাই আর শ্রাবন দা  মনে করে নি আমি ওদের গোত্রের নই। আমাকে ভীষন আপন করে নিলেন নিমিষেই। আসলে আমাদের পরিবারটাই এমন। নতুন কেউ এলে সহজেই টেনে নিই পরম মমতায়, ভালোবাসায়।  বন্ধুত্বের টানে হৃদয়ের খুব কাছেই চলে আসি আমরা। সিনিয়র, জুনিয়র বলে কোন কথা নেই। সিনিয়র বলে যারা একটু অহম দেখিয়েছে, টিকতে পারে নি কালের কন্ঠে। সময়ের সাথে ঝরে গেছে তারা।  আমাদের পকেটে টাকা নেই, হয়তো নিতান্তই গরীব আমরা। পোশাকে আশাকে, লাইফ স্টাইলে আমরা যথেষ্ট আধুনিক নই। অনর্গল ইংরেজিতে কথা বলতে পারি না আমরা। আমাদের অযোগ্যতা ফুটে উঠে বারবার। কিন্তু বস্তুনিষ্ট ও সময়োপযোগী সংবাদ পরিবেশনে আমরা বধ্য পরিকর।  সঠিক সংবাদ উপস্থাপনের দায় আছে বৈ কি আমাদের .. ! 
joyanto shaha, MD. asad, indrajit emon, rajib kamal srabon, anamika mandal
লেখনীর মাধ্যমেই আমরা সোচ্চার হচ্ছি দেশ ও মাতৃকার কল্যানে। সুখে-দুঃখে পাশাপাশি পরম বন্ধু হয়ে থাকতে চাই আমরা। আমাদের বন্ধু দলে আপনি স্বাগত সদলবলে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

thanks.